আইনজীবীকে পিটিয়ে হত্যা করা জঙ্গিবাদী আচরণ: শেখ হাসিনা

চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে আইনজীবীকে পিটিয়ে হত্যা করা জঙ্গিবাদী আচরণ বলে মনে করেন তিনি।

 

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

 

তিনি বলেন, তারা যেই হোন না কেন শাস্তি পেতেই হবে। তবে তিনি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে মুক্তি চেয়েছেন।

 

গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকালে চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। ঘটনার দুই দিন পরে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

 

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দ্রুত শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। একজন আইনজীবী তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন, আর তাকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা এক ধরনের জঙ্গিবাদী আচরণ। এই কাজ যারা করেছে তারা সন্ত্রাসী এবং জঙ্গি। তারা যেই হোক না কেন শাস্তি তাদের পেতেই হবে।

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ক্ষমতা দখলকারী উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনূস সরকার যদি এই সন্ত্রাসীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাকেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’

 

দেশবাসীকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।’

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ। সাধারণ মানুষের উপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই সব নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাই।’

 

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের একজন শীর্ষ নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। চট্টগ্রামে মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে মসজিদ, মাজার, গির্জা, মঠ এবং আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি আক্রমণ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অগণিত নেতা-কর্মী, ছাত্র-জনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার পরে চলছে হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের মাধ্যমে হয়রানি। আমি এসব নৈরাজ্যবাদী ক্রিয়াকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *