
বিস্তারিত
ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল,সুব্রত বাইন,আব্বাস আলী ওরফে কিলার আব্বাস ও সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন
ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল,সুব্রত বাইন,আব্বাস আলী ওরফে কিলার আব্বাস ও সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন
কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য তৎপরতা শুরু করেছেন। একইভাবে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছেন। অপরাধের পুরোনো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেওয়ার পাশাপাশি চাঁদা চেয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকায় গত মাসে জোড়া খুনের একটি ঘটনায়ও একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এসেছে।
সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মগবাজারের বিশাল সেন্টারে দলবল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। একটি দোকান দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। পরে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ডেকে কথা বলেছেন। এ নিয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শুধু সুব্রত বাইন নয়, মোহাম্মদপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালসহ অনেকেরই এ ধরনের তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে। প্রায় দুই যুগ পর জামিনে বের হওয়া পিচ্চি হেলালের বিরুদ্ধে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গত ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর রায়েরবাজারে সাদেক খান আড়তের সামনে ওই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এলাকার ‘দখল’ নিতে সন্ত্রাসীদের দুই পক্ষের বিরোধ থেকে জোড়া খুনের ওই ঘটনা ঘটেছে।
শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে যাঁরা কারাগারের বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁদের ওপর সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি রাখা দরকার। এ কাজ ঠিকভাবে করতে না পারলে সামনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে।
নাইম আহমেদ সাবেক কমিশনার, ডিএমপি
ঘটনার পর পিচ্চি হেলালকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুরের খুনের ঘটনায় পিচ্চি হেলাল গ্রেপ্তার না হলেও দু-তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। অন্য শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ওপরও পুলিশের নজরদারি রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী হোক বা যে–ই হোক, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্তত ছয়জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই এক থেকে দেড় যুগের বেশি সময় ধরে কারাগারে ছিলেন। জামিনে মুক্ত হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ‘কিলার আব্বাস’ হিসেবে পরিচিত মিরপুরের আব্বাস আলী, তেজগাঁওয়ের শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, হাজারীবাগ এলাকার সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন। এ ছাড়া ঢাকার অপরাধজগতের আরও দুই নাম খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন ও খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসুও কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
তাঁদের বাইরে বিদেশে থাকা কোনো কোনো সন্ত্রাসী আবার দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন বলেও আলোচনা আছে। এ ছাড়া আত্মগোপনে থাকা কেউ কেউ প্রকাশ্যে এসেছেন। এমনই একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে মনে করা হতো, তিনি ভারতে গ্রেপ্তার হয়ে সেখানেই আছেন। তবে ঢাকার অপরাধজগতের একটি সূত্র জানিয়েছে, সুব্রত বাইন সরকার পতনের আগে থেকেই দেশে একটি ‘গোপন’ জায়গায় ছিলেন। সরকার পতনের পর সেখান থেকে তিনি ছাড়া পান।