সব ভাইঙ্গা লইয়া যাইতেছে, আমরারে বাঁচান’

নদী থেকে আপনারা আমারারে বাঁচান, সব ভাইঙ্গা লইয়া যাইতেছে। আপনাদের কাছে দাবি জানাই, আপনারা আমাদেরকে বাঁচান।’ গোয়াইনঘাটে নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে নিজের ভিটেমাটি রক্ষা করার জন্য নদীতীরে বসে এভাবেই আর্তনাদ করেন উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের সাতকুড়ি কান্দি গ্রামের দিনমজুর আব্দুল লতিফ (৭০)।

 

 

নদীভাঙনে গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইন নদীবেষ্টিত ডৌবাড়ী ও তোয়াকুল ইউনিয়নের লক্ষ্মীনগর, নেওয়ার কান্দি, বাঘার মুখ, ডৌবাড়ী, খইয়ার খাল, সাতকুড়ি কান্দি, চাতল হাওর, চার গ্রাম, বেলুঙ্গুড়া ও নিহাইন ঘাট এলাকার কয়েক হেক্টর ফসলি জমিসহ ভেঙেছে অনেকের ভিটেমাটি। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষের।

 

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ও দৈনিক শতশত বাল্কহেড আসা যাওয়ার ফলে এসব নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

 

 

সরেজমিনে নদীভাঙনের কবলে পড়া সাতকুড়ি কান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদীতীরে একের পর এক ঢেউ আছড়ে পড়ছে। ঢেউয়ে ভাঙছে মাটি। বড় বড় ফাটল ধরেছে চরে। ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে অনেকের ভিটেমাটি ও ফসলি জমি। ভাঙন ধরেছে বেশ কয়েকটি গ্রামে।

 

 

কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাত থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী মিলে প্রায় শতাধিক বালুভর্তি বলগেট আটক করে রেখেছে।

 

 

নদীপাড়ের বাসিন্দা কাওছার আহমেদ বলেন, নদী আগে খুবই ছোট ছিল। এখন অতিদ্রুত ভাঙছে। নদী আমাদের বাড়িঘর নিয়ে গেলে আমরা কোথায় থাকব।

 

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই এলাকায় আমাদের বাপ-দাদার ঘর। নদী ভাঙতে ভাঙতে আমাদের ঘরের কাছাকাছি এসে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যেতে পারে। সরকার যদি আমাদের নদী ভাঙা থেকে রক্ষা না করে তাহলে আমরা কোথায় যাব? সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, আমাদেরকে রক্ষা করুন।

 

জফলং, পিয়াইন, গোয়াইন ও চেঙ্গেরখাল নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও বড় বড় বাল্কহেড প্রবেশের ফলে এসব নদী ভাঙছে।

 

এলাকাবাসীর এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসী অভিযোগ দিলে এসিল্যান্ড পুলিশ ও তহশিলদার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *