সার্জারী ওয়ার্ডের দিনগুলো  স্মরণীয় হয়ে থাকবে  – ডিএমএফ ইন্টার্ণ তামীম আহাম্মেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদন।।

 

বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল ( বিএম এন্ড ডিসি)  রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকালিটি (ডিএমএফ) ডিগ্রী অর্জনে ৩ বছরের একাডেমিক শিক্ষাবর্ষ শেষ করে ৯ মাসের ইন্টার্ণী শুরু  করলাম  – কুমিল্লা সদর হাসপাতালে। ২০২৫ খ্রীঃ এপ্রিলের ৫ তারিখে জয়েন দিলাম সার্জারী ডিপার্টমেন্টে৷ শুরু থেকে সার্জারী ওয়ার্ডকে  শুধু  চিকিৎসা নয় – এটিকে একটি আর্ট মনে করি।  এতসুক্ষভাবে স্যাররা একজন রোগীর সার্জারী করাতেন তা দেখতেই যেন ভালো লাগতো।

তবে ; এ ওয়ার্ডে কয়েকটি ভাগে ডিউটি পরত ; যেমন;   রুম ডিউটি, ওয়ার্ড ডিউটি, ওটি ডিউটি সহ ইত্যাদি নামে।  আমার প্রথমত পুরুষ ওয়ার্ডে ডিউটি  পরেছে।  তেমন কিছুই বুঝতাম না – ইন্টার্ণীর প্রথম ওয়ার্ড এটা আমার। তাই কয়েকদিন সিনিয়রদের থেকে দেখে দেখেই কাটলো।  এখানে আসা রোগীদের ফলোয়াপ ও স্যারদের নির্দেশনায় চিকিৎসা দেয়া আমাদের মূল কাজ ছিল। দুদিন পর থেকে নিজে কাজ শুরু করলাম।  শিখতে লাগলাম এবং শিখে গেলাম ১৫ দিনের মাথায়। নতুনঅবস্থায়  ওটিতে গিয়েও তেমন কিছু পারতাম না।  আস্তে আস্তে দেখতে দেখতে ভালোই আইডিয়া হলো।  এরপর আমাকে দেয়া হলো রুম ডিউটিতে ।  রুম ডিউটি হলো শিখার মূল জায়গা। এখানে রোগীদের কিভাবে কাউন্সিল করে স্যাররা – তা দেখে শিখা যায়।  কিভাবে কোন রোগীর এক্সপোস করতে হয় তা জানা যায়।  বেশ কয়েকদিন থাকার পর ফিমেল ওয়ার্ডে ডিউটি শুরু হলো।  সবমিলিয়ে কেমন করে  দেড় মাস শেষ হয়ে গেলো বলতেই পারি না।   বলে রাখা ভালো; কুমিল্লা সদর হাসপাতালে সাপ্তাহের রবি ও বুধবার – ২দিন  মেজর ওটি হয় এবং সাপ্তাহে ১ একদিন শনিবার মাইনর ওটি হয়।

মেজর ওটি বলতে ; এপ্যান্ডিসাইটিস,  কোলেলিথিয়াসিস, হার্নিয়া, ডায়াবেটিস ফোট,সেলুলাইটিস, সারকামসেশন,স্টোন সহ ইত্যাদি বড়  অপারেশন।  মাইনর ওটি বলতে; ছোট লাইফোমা, সেলুলাইটিস ইত্যাদি ছোট  অপারেশন।

রাতের ডিউটিতে কিছু মজার স্মরণীয় ঘটনা সারা জীবন মনে থাকবে। তার মধ্যে একটি হলো ; রাত তখন ১ টা। চোখে ঘুম আসলো মাত্র। রোগীদের অপারেশনের পর দিন আমার ডিউটি পরেছে।

সাধারণত এ দিনগুলো এমনিতেও একটু জটিলতা থাকে।  একজন পুরুষ রোগীর ঘুম আসছে না তাই এসে ডাকাডাকি করছে।  ভাবলাম ব্যাথায় হয়তো ঘুমাতে  পারছে না তাই ডাকাডাকি করছে। জিজ্ঞেস করলাম ; কি সমস্যা।  বললেন; স্যার – ঘুম আসছে না।  বললাম; কেন।  তিনি বললেন; “বাইত মুরগী ডি জানি কেহ খোয়ারে দিসেনি এ চিন্তায় ঘুম আইয়ে না ” আমি কি হাসব না কাঁদবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না।  উনাকে একটু শান্তনা দিয়ে।  একা একা নিজেই বেশ কিছুক্ষণ হাসলাম এখনও মনে পরলে হাসি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *